২০১২ মহাপ্রলয় কতদুর

Mar 18, 2011
২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসের ২1 তারিখ এ নিয়ে বহু কথা বলা হয়েছে বহু লেখা, বহু ভিডিও, বহু ডকুমেন্টারী এইনামে তৈরী হয়েছে হলিউডি ব্লকবাষ্টার মুভি সেটা এখনও না দেখে থাকলে এটুকু উল্লেখ করতে পারি, ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে পৃথিবী। যাদের সামর্থ্য আছে তারা জীবন বাচাতে নুহের মত নৌকায় উঠেছেন বাইরে প্রলয় চলছে। এভারেষ্টের বদলে সবচেয়ে বড় পর্বতসৃংগের যায়গা দখল করেছে আফ্রিকা
এসবের কতটা গুজব কতটা বিশ্বাসযোগ্য তা নিয়ে তর্ক থাকাই স্বাভাবিক অন্তত যেসব যুক্তি তুলে ধরা হয় তাকে অবিশ্বাস করলে অবাক হওয়ার কিছু থাকে না
যেমন ধরুন, মায়া ক্যালেন্ডার তারা ক্যালেন্ডারকে আমাদের মত শুধুমাত্র দিন-তারিখ হিসেব করার জন্য ব্যবহার করত না, ব্যবহার করত ভবিষ্যতে কি ঘটবে সেটা জানার জন্য সেই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১৫১৯ সাল তাদের জন্য বিপদময় বছর ধুমকেতু দেখা দেবে, বিপদ আসবে দক্ষিন দিক থেকে এবং ইতিহাস বলে সেই বছরই ধ্বংশ হয়ে গেছে মায়া সভ্যতা প্রাকৃতিক কারনে না, বিদেশী আক্রমনের কারনে যারা এসেছিল দক্ষিন দিক দিয়ে মায়া, এজটেক, ইনকা সভ্যতা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে পৃথিবী থেকে
মায়া ক্যালেন্ডারের শেষ দিন ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বর এরপর আর কোন দিন নেই কেউ বলেন এটা বিশ্বের শেষ কেউ বলেন সভ্যতার শেষ নতুন সভ্যতা শুরু হবে এরপর মায়া ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পৃথিবী এর আগে ৫ বার ধ্বংশ হয়েছে
কিংবা ধরুন নষ্ট্রাডামুসের ভবিষ্যতবাণী তার সময়ে সরাসরি ভবিষ্যতবাণী করার সুযোগ ছিল না এধরনের কথা বললে আগুনে পুড়ে জীবন দিতে হত তার সব বক্তব্য তাই প্রতীকি যায়গা, সময় বা ব্যক্তির নাম উল্লেখ নেই ফরাসী বিপ্লব থেকে শুরু করে কেনেডির হত্যাকান্ড, চাদে মানুষের পদক্ষেপ পর্যন্ত সবকিছুই তার ভবিষ্যতবানীর সাথে মিলে যায় অন্তত একটা যায়গায় তিনি যায়গার নাম উল্লেখ করেছেন, মেসোপটেমিয়া বর্তমানের ইরাক বিদেশী আক্রমনের ফলে ধ্বংশাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে এবং একসময় বিদেশী শক্তি পরাজিত হবে এটা চলমান ঘটনা, এবং আমরা জানি আমেরিকা সেখানে খুব ভাল অবস্থায় নেই একসময় পরাজয় স্বিকার করেই হয়ত তাদের বিদেয় নিতে হবে
২০১২ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, আকাশ থেকে আসা আগুনে নদী-সমুদ্রের মাছ ঝলসে যাবে
তার আকা কয়েকটি ছবি দেখানো হয়েছে রোমে একটি ছবিতে তিনি নির্দেশ করছেন সুর্যের দিকে সুর্যের চারিদিকের রেখা শর্পিলাকার আমাদের গ্যালাক্সি শর্পিলাকার তা মানুষ জেনেছে তার মৃত্যুর বহু বছর পর তার জানার কোন সুযোগ ছিল না কিন্তু তিনি ছবি একে গেছেন আর এই বিশেষ দিনে মহাবিশ্বের গ্রহগুলি একই সরলরেখায় অবস্থান করবে, সুর্য গ্যালাক্সির কেন্দ্রে থাকবে এটা বলা অকল্পনীয় ছিল
বর্তমানে বিজ্ঞানীরা জানেন এই বিশেষ দিনে সৌরজগতের সবকিছু একই সরলরেখায় অবস্থান করবে গ্যালাকটিকাল এলাইনমেন্ট নামের এই সময়ে সুর্য অবস্থান করবে গ্যালাক্সির ঠিক কেন্দ্রে এর আগে যখন এই ঘটনা ঘটেছে তখন বিশ্ব থেকে শতশত প্রজাতি হারিয়ে গেছে
এর ফল কি হতে পারে মানুষের জানা নেই উত্তর মেরু দক্ষিন মেরু দিক পরিবর্তন করতে পারে যদি সেটা ঘটে তাহলে ইলেকট্রনিক্স-ইলেকট্রিক্যাল বলে যাকিছু আছে সেগুলো অকেজো হবে জাপানের সাম্প্রতিক ভুমিকম্পে পৃথিবীর অক্ষ সরে গেছে নাসা হিসেব করে বলছে দিনের সময় ১.৮ মাইক্রোসেকেন্ড কমে যেতে পারে এজন্য। একেবারে সামান্য, কিন্তু কিছু মিল কি পাওয়া যাচ্ছে না!
যারা একথা বিশ্বাস করেন তারা বক্তব্যের সমর্থনে হাজির করছেন সবগুলি প্রাচীন সভ্যতার বক্তব্য মিসর, চীন, ভারত থেকে মায়া। সবাই একই কথা বলেছেন অনেকে বাইবেলে সাংকেতিকভাবে এর প্রমান আছে দাবী করছেন ফ্যামিলি রেডিও (ক্যালিফোর্নিয়া) বাংলায় একটি প্রচারপত্র বিলি করছে যার শিরোনাম জগতের শেষ প্রায় এসে গেছে! তাদের হিসেবে অবশ্য দিনটি ২০১১ সালের ২১ মে, নুহের ঘটনার ৭ হাজার বছর (ধর্মীয় ভাষায় ৭ দিন) পুর্তির দিন
২০১২ এর বিপর্যয় একদিনে ঘটবে এমন কথা কেউ বলছেন না বর্তমানের গ্লোবাল ওয়ার্মিং থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক ঘুর্নিঝড়, সুনামি, ভুমিকম্প ইত্যাদিকে মহাপ্রলয়ের পুর্বলক্ষন বলে উল্লেখ করছেন অনেকেই মহাপ্রলয়ের কারন একেজনের মতে একেকরকম ধর্মীয় বক্তব্য হচ্ছে পাপে পুর্ন হলে একসময় ঈশ্বর ব্যবস্থা নেন। অন্যদের বক্তব্য, লোভের কারনে মানুষ যেভাবে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করেছে তাতে এটা ঘটতেই পারে।
নষ্ট্রাডামুসের আকা শেষ ছবিটি উল্লেখযোগ্য সময়ের চাকা থেমে রয়েছে, তার হাতে বইয়ের সাদা পাতা ভবিষ্যতে কি ঘটবে জানা নেই কারো বিশ্ব যদি টিকে থাকে হয়ত এই বিশ্বের মানুষকেই নতুনভাবে নিজেদের ভবিষ্যত লিখে নিতে হবে সেখানে

1 comments:

Anonymous said...

আসলেই শঙ্কা হয়, সত্যই কিছু হবে কিনা? সত্য সত্য কিছু হলে আমাদের সভ্যতা কোন প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারবে না। জাপানের ভূমিকম্প এবং সুনামি দেখিয়ে দিয়েছে, প্রকিৃতির কাছে আমরা কত অসহায়।

 

Browse