পার্লামেন্ট মানে মিথ্যে বলা

Mar 21, 2011
প্রাকটিস এবং পারফেকশন দুটি শব্দ শুনতে যেমন কাছাকাছি, অনেকে এদুটি একসাথে করে বলেন প্রাকটিসে পারফেকশন হয় কাজেই যদি ভাল ফল পেতে হয়ে তাহলে প্রাকটিস প্রয়োজন
নিশ্চয়ই বিরক্ত হচ্ছে এই পুরনো কথা শুনে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা একেবারে জ্বলন্ত উদাহরন তো দেখাচ্ছেন শুধু ক্রিকেটারই বা কেন, জাতি হিসেবে সবাই প্রাকটিস ছাড়াই পারফেক্ট কাজে আগ্রহি লক্ষ লক্ষ ছাত্রকে দেখুন, তারা আশা করছে পড়াশোনা শেষ করে বিশাল একটা চাকরী পাবে, গাড়ি হাকাবে সেই চাকরীতে কি কাজ করতে হবে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই ওসব প্রাকটিস করে সময় নষ্ট করে কে ! একবারে বাজিমাত করে দেব
কাজের কথায় আসা যাক বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা কি প্রশ্ন করলে নানা মুনীর নানামত পাওয়া যাবে কারো মতে দুর্নীতি, কারো মতে অদক্ষ সরকার, কারো মতে দারীদ্র, কারো মতে অশিক্ষা যাই হোক না কেন ঘুরেফিরে শেষ যা বাস্তবতা তা হচ্ছে দেশে কয়েক কোটি বেকার রাজপথে সবসময় লক্ষ লক্ষ মানুষের ভীড় এই মানুষগুলি যদি কাজে ব্যস্ত থাকত তাহলে নিশ্চয়ই রাস্তায় ঘোরার সময় পেত না ওই রিক্সাচালকদের কথাই ধরুন না কেন ? ১০ থেকে ১৫ লক্ষ মানুষ হাড়ভাঙা পরিশ্রম করছে মানুষকে এক যায়গা থেকে আরেক যায়গায় বয়ে নিয়ে যাচ্ছে একটা কারখানার কথা ভাবুন তো যেখানে এই পরিমান মানুষ এই পরিমান শ্রম দেয় সেটা নিশ্চয়ই বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারখানা বিপরীতভাবে, এরা যে কাজ করছে সেকাজ আরো ভালভাবে করা যায় যান্ত্রিক পদ্ধতিতে মানুষ আরো কম শ্রমে, কম খরচে, কমম সময়ে, আরাম করে যাতায়াত করতে পারে যদি সে ব্যবস্থা করা হয়
সেটা হচ্ছে না কারন, এই মানুষগুলিকে কেউ কারখানায় লাগাচ্ছে না তারা নিজেরাই বেকার সমস্যার সমাধান করে নিচ্ছে রিক্সা বন্ধের কথা বলুন, সাথেসাথে বহু মানবদরদী পথে নামবে আগে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করুন ওদেরকে পথে বসাবেন নাকি! সাথে আমাদেরও!!
এতদিন সরকার কর্মসংস্থানের কথা শুনিয়েছে একটা মাত্র পদ্ধতির কথা বলে নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র খোজা হচ্ছে কোন দেশ এধরনের পরিশ্রমি মানুষ নিতে চায় বের করা হচ্ছে তারা নিজের টাকায় যাবে, কাজ করবে, দেশে টাকা পাঠাবে তাদের উন্নতি, দেশের উন্নতি, সরকারের সাফল্য
সমস্যা হচ্ছে, দিন বদল হয় অন্তত বাংলাদেশের শ্রমের সবচেয়ে বড় বাজার মধ্যপ্রাচ্যে সেটা হচ্ছে তিউনিসিয়া, মিসর, লিবিয়া, বাহরাইন এসব দেশে পরিবর্তন হচ্ছে লিবিয়ায় বিমান-ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চলছে। অনেকেই বলছেন এটা যুদ্ধ। ইরাক যুদ্ধ থেকে পার্থক্য এটাই, এইভাবে আকাশ থেকে হামলা করে গাদ্দাফিকে সরানো সম্ভব না। ফল হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ। যার অর্থ যারা এখনো থেকে গেছে তাদেরও সেদেশ থেকে ফেরত আসা। বাহরাইনে সেনা পাঠিয়ে সৌদিরাও নিজেদের জড়িয়েছে সেখান থেকে ফেরত আসা শুরু হলে ...
দেশ যারা চালান তারা বসে নেই অবশ্যই দায়িত্ব পালন করছেন এখান থেকে ওখান থেকে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাঠানো হয়েছে এয়ারপোর্ট তাদের রিশেপসনের জন্য পরিচিত এক শিক্ষককে টানা ৪০ ঘন্টা সেখানে কাটাতে হয়েছে খাবার খরচটাও দেয়া হয়নি বিদেশ ফেরতদের হাতে ১ হাজার টাকা করে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে একটাই বক্তব্য, মুখ খোলা যাবে না। তালিকা করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি টাকাপয়সা দেয় তাহলে আরো কিছু দেয়া হবে
অবশ্য এতে সমাধান হচ্ছে না এখন পর্যন্ত এই ফেরত মানুষের সংখ্যা হাজারে প্রকাশ করা হচ্ছে সেটা অনায়াসে লাখে যেতে পারে সেটাই সম্ভাবনা কাজেই তাদের দায়িত্ব অন্যভাবে নিতে হয়
এবং মন্ত্রী মহোদয় সেই ঘোষনাও দিয়েছেন যারা ফেরত এসেছে, আসবে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে
আপনি প্রশ্ন করতে পারেন সরকার চাইলেই যদি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে তাহলে দেশে কয়েক কোটি বেকার রয়েছে কিভাবে ? এখানে কাজের সুযোগ করে দিলে তাদের তো জমিজিরেত বেচে ওই মরুভুমিতে যাওয়ার প্রয়োজনই হত না
ওটা আসলে কথার কথা বলতে পারেন প্রাকটিস পার্লামেন্ট শব্দকে ফরাসী ভাষায় ভাঙলে দুটি শব্দ পাওয়া যায়, যার অর্থ হচ্ছে Speak এবং Lie তাদেরকে সংসদে সবসময় মিথ্যে বলতে হয়
অনবরত প্রাকটিস না করলে পারফেক্টলি সেটা করবেন কিভাবে ?

0 comments:

 

Browse