কোটি টাকায় বাচুন

Oct 30, 2011
বেসরকারী টিভি চ্যানেলের একজন জনপ্রিয় সাংবাদিকের কাছে চাদা চাওয়া হয়েছে ৫ কোটি টাকা। এত গুরুত্বপুর্ন একজন ব্যক্তির খবর গোপন থাকে না। খবরটা প্রকাশ পেয়েছে। উত্তরে তারকাছে খামে ভরে দুখানা বুলেট পাঠানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ কি করেছে সে প্রশ্ন করবেন না। কদিন আগে আরেকজন মহিলা থানায় গিয়েছিলেন চাদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। তার সামনেই থানার কর্মকর্তা মোবাইলে ফোন করলেন সেই চাদাবাজের কাছে। তাদের নাম্বার থানার সবার জানা এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আর ফোনে হাই-হ্যালো করাটাও যে সকাল-বিকেলের রুটিন তাকেও সন্দেহ নেই। সেটা দেখার বিষয়ও না। দেশ চালাতে হলে সবাইকে সাথে নিয়ে গনতান্ত্রিকভাবে চলতে হয়। সরকারের হাতে একদিকে পুলিশ-র‌্যাব আরেকদিকে এলাকার বঢ়ভাই, এরাই তো সরকারের ক্ষমতা।
দেখার বিষয় হচ্ছে কোটি টাকা। বাংলাদেশে কোন টিভি সাংবাদিক কোটিটাকার মালিক হন না। বিবিসির সাংবাদিকের মন্তব্য অনুযায়ী সম্ভবত বিশ্বের কোনদেশেই হন না। ৫ কোটি টাকা তিনি দেবেন কোথা থেকে ?
নিতান্তই সরকারবিরোধী হলে বলতে পারেন কারন আসভে অন্যখানে। তিনি প্রায়ই টকশো পরিচালনা করেন, নানারকম আজেবাজে কথা বলেন, দেশের-সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করেন। তাই ওইসব পাড়ার ভাইদের মাধ্যমে একটু বার্তা পৌছানো। তারাও জানে ৫ কোটি টাকা পাওয়া যাবে না।
কথাটা কিছুটা বিশ্বাসযোগ্য তো বটেই। টাকা যদি না থাকে তাহলে দেবেন কোথা থেকে ? খটকা লাগল আরেক ঘটনার সাথে মিল দেখে।
পরিচিত একজন ব্যবসা করেন এক সুপার মার্কেটে। বহুলক্ষ টাকা দিয়ে দোকানের পজিশন কিনেছেন। সাধারন নিয়ম হচ্ছে তিনি ৯৯ বছর সেটা ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। মাসেমাসে অবশ্য কিছু টাকা দিতে হয়। এছাড়া বিদ্যুতবিল, পানিখরচ এমনকি টয়লেটের জন্যও মাসে মাসে টাকা দিতে হয়। সাধারন ক্রেতারা মার্কেটের টয়লেট ব্যবহার করলেও জনপ্রতি টাকা দিতে হয়। এগুলির মাফ নেই। তবে তিনি ইচ্ছে করলে মাসেমাসে যে নজরানা দিতে হয় সেটা বাদ দিতে পারেন।
হিসেবটা এমন, আপনি যায়গা লিজ নিয়েছেন এবার টাকা দিয়ে পুরো মালিক হয়ে যান। হিসেব কশে ঠিখ করা হয়েছে টাকার পরিমান, প্রতি বর্গফুটের জন্য ১১ হাজার। যে দোকান নিয়েছেন ১০ লক্ষ টাকায় সেখানে আরো ৩০ লক্ষ টাকা দিন।
তার স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হতে পারত, আমার চুক্তি ৯৯ বছর পর্যন্ত, আমি সেটা পাল্টাবো কেন ? রীতিমত দলিল করা আছে। সেটা দেখার জন্য আদালত আছে, আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য পুলিশ আছে।
সমস্যা হচ্ছে, ওপথে পা দেবেন না। এর পেছনে রয়েছেন পাড়ার অমুক ভাই। জয় বাংলার লোক। সবসময় সাথে পিস্তল নিয়ে দুজন বডিগার্ড থাকে। আর পুলিশ-আদালতের কথা বলছেন ? ওরা কি আপনার পক্ষে যাবে মনে করেন ?
কাজেই বেচা গরু আবার বেচে যদি আরো টাকা পাওয়া যায় আপত্তি কিসের ? শদুয়েক দোকান থেকে অনায়াসে ২০-৩০ কোটি টাকা।
পাড়ার ভাই যে কোটি টাকা সত্যিই চেনেন এতে সন্দেহ নেই। আজ ভাই নামে পরিচিত, আগামীতে নির্বাচনে দাড়াবেন, তারপর একসময় মন্ত্রী হবেন। একজন মন্ত্রীর পেছনে লক্ষ লক্ষ পরিবহন মালিক-শ্রমিক দাড়িয়েছে তারন তিনি নিশ্চয়তা দিয়েছেন মানুষ মারলেও কোন ড্রাইভারের নামে মামলা হবে না। আরেক মন্ত্রি যদি সাহস করে বলেন চাদাবাজের নামে মামলা করা যাবে না তাহলে সেই সংখ্যা কয়েকগুন হবে তাতে সন্দেহ নেই।
আপনি কি করতে পারেন সে সিদ্ধান্ত আপনার। এদেশের পোরেষ্ট অব পোর দেখিয়েছে তারা ঋন নিয়ে ব্যাংকের চেয়ে কয়েকগুন বেশি সুদ দিতে পারে। আপনি ব্যবসা করে যাবেন, টাকা কামাবেন আর সেগুলো তুলে দেবেন এইসব ভাইদের হাতে। তাদের নেতা-মন্ত্রী বানাবেন।
যদি তাতে আপত্তি থাকে দেশকে জয় বাংলার লোকের হাতে ছেড়ে দিয়ে কেটে পড়ুন।

0 comments:

 

Browse