সভ্যতার পতন

Jan 26, 2011
ইতিহাস বলে বিশ্বের অনেকগুলি সভ্যতা ধ্বংস হয়েছে। চীন-ভারত-মিশর-গ্রীক-রোমান-মুসলিম-এজটেক-ইনকা-মায়া সব সভ্যতাই। ধ্বংস বলতে তারা যে উতকর্ষতা দেখিয়েছিল তাদের সময়ে সেটা ধরে রাখতে পারেনি। কোথাও কোথাও ধ্বংসস্তুপ রয়েছে নিদর্শন হিসেবে। পর্যটকদের আগ্রহের বস্তু। তারা দেখে অবাক হয়ে ভাবেন, আহা কত উন্নতই না ছিল সেই যুগের মানুষ। কম্পিউটার ছাড়াই হাজার বছর আগে মানুষ এসব করত, ভাবা যায়!
আমাদের সে ভয় নেই। বর্তমান সভ্যতা চিরস্থায়ী। জ্ঞান-বিজ্ঞান মানুষকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যেখানে মানুষ অমরত্ব লাভ করতে পারে। বরং মৃত্যু বন্ধ হলে জন্মসমস্যার সমাধান কিভাবে হবে সেটাই বিবেচ্য। এই শতকেই যখন বিশ্বের জনসংখ্যা ৯০০ কোটিতে যাচ্ছে। মৃত্যু না হয়ে যদি জন্ম হতেই থাকে তাহলে তারা দাড়াবে কোথায় ?
অন্য গ্রহ সমাধান হতে পারে। অনেকেই বলছেন চাদে ঘরবাড়ি বানানো শুরু হবে এই শতকেই। মংগলে হলে আরো মংগল। স্পেসশীপে চড়ে যাতায়াত করবেন সবাই।  হলিউডের ছবিতে দেখা যায়।
আপাতত সমস্যা অন্যখানে। দুবছর আগে খাদ্যের দাম বাড়ায় মানুষ পথে নেমেছিল। সরকারের পতনও হয়েছে। আবারও দাম বাড়তির দিকে। এরই মধ্যে তিউনিসিয়ায় সরকারের পতন হয়েছে। মিসরের মানুষও তাকে উদাহরন হিসেবে ব্যবহার করে পথে নেমেছে। সেটা দেখে হয়ত আরো দেশেও-
সে যাকগে। পরের দেশ নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকারটা কি ?
বারং নিজেদের দিকেই দেখা যাক।
সরকারী হিসেবে দেশে বেকারের সংখ্যা আড়াই কোটি। বেসরকারী হিসেবে সাড়ে চার থেকে পাচ। আরো বাড়ছে। এদের মধ্যে বিপুল পরিমান শিক্ষিত বেকার। দেশ থেকে নিরক্ষরতা যখন বিদায় করা হচ্ছে তখন সব বেকারই শিক্ষিত ধরে নিতেও সমস্যা নেই।
কথা হচ্ছে, তারা বেকার কেন ?
কারন চাকরী নেই। কেউ চাকরী দিচ্ছে না। যাদের হাতে চাকরী তারা বলছে যোগ্য লোক নেই।
বিষয়টা বেশ গোলমেলে। একদিকে কয়েককোটি শিক্ষিত মানুষ চাকরী খুজছে, আরেকদিকে প্রতিস্ঠান যোগ্য লোক খুজছে। একে অন্যের দেখা পাচ্ছে না।
সহজ সমাধান দিতে বলতে পারেন, যারা শিক্ষিত তারা আসলে যোগ্য নন। অন্তত কথা অর্থ তাই দাড়ায়।
কি ভয়ংকর কথা। তাহলে তারা বছর বছর এট টাকাপয়সা-সময় ব্যয় করছেন কেন। স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি-কোচিং এতকিছু।
আর এই সমস্যা নাকি শুধু এই দেশেই সীমাবদ্ধ না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি উন্নত দেশেও মানুষ বলছে একই কথা। শিক্ষিত মানুষ চাকরী খুজছে আর চাকরী দেনেঅলারা বলছে যোগ্য লোক নেই।
কিছু মানুষ আগবাড়িয়ে কথা বলতে পছন্দ করে। নিজের বিদ্যে জাহির করে। তারা বলছে অল্পদিনের মধ্যেই নাকি সমস্যা আরো প্রকট হবে। এখনো তাত্ত্বিকভাবে পৃথিবীর খাদ্য দিয়ে পৃথিবীর মানুষের চাহিদা মেটে, কিছুদিন পর সেটা মিটবে না। মানুষ বাড়ছে-খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে আর একইসাথে চাষের জমি কমছে। মাটির নিচের সম্পদ শেষ হয়ে আসছে। আগামীতে নিশ্চিতভাবেই বহুসংখ্যক মানুষকে অনাহারে থাকতে হবে। ম্যালথাসের তত্ত্ব নাকি এখনো মিথ্যে হয়ে যায়নি। অন্তত ৬ বার যখন বিশ্ব ধ্বংশ হয়েছে, অধিকাংশ প্রানী বিলোপ হয়েছে, পুরনো সভ্যতার সবগুলি যখন ধ্বংস হয়েছে তখন আরেকবার হবে না সে নিশ্চয়তা দিচ্ছে কে ?
সময় থাকতে সাবধান থাকা ভাল। আবার নাকি শেয়ারের দাম বাড়ছে। এইবেলা কিছু কামিয়ে নেই।

0 comments:

 

Browse