ফালতু বিষয়

Jan 14, 2011
খাদ্যের দাম বাড়ায় বিশ্বের কয়েকটি দেশে দাঙ্গা হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। জাতিসংঘের হিসেবে তখন মুল্যবৃদ্ধির সুচক ছিল ১৯১।  এখন আবারও শোনা যাচ্ছে ওই দাঙ্গার খবর। তিউনিসিয়ায় নাকি ৫০ জনের বেশি মারা গেছে এরই মধ্যে। আবারও ওই সুচকের বৃদ্ধি। এখন সেটা ১৯২.৩। আগের থেকেও বেশি।
কি ফালতু বিষয় রে বাবা। আমরা তো জানি সুচক বেড়ে নতুন রেকর্ড গড়লে সবাইকে মিষ্টি খাওয়াতে হয়। ওরা এমন কেন ? পথে নেমে মারামারি করছে। সেটা তো করে সুচক পড়ে গেলে।
তেলের দামও নাকি বৃদ্ধির দিকে। দুবছর আগে দাঙ্গার সময় দেড়শর কাছাকাছি পৌছেছিল। এখন আবার পা বাড়াচ্ছে তিন অংকের দিকে। এটাও নাকি একটা কারন। তেলের দাম বাড়লে পরিবহন খরচ বাড়ে। সেইসাথে বাড়ে খাবারের দাম। এই তত্ত্ব অবশ্য আমরা ভাল করেই জানি। তেলের দাম বাড়লে রিক্সাভাড়াও বাড়ে। ওরাও নাকি চাকায় তেল দেয়। সেটা বেশি দামে কিনতে হয়। কিন্তু ভুক্তভোগির সমস্যা অন্যখানে। এই ঢাকা শহরে মানুষ রান্না করে গ্যাস দিয়েই। যার থাকে সে সারারাত জ্বালিয়ে ঘর গরম রাখে। আর যার থাকে না-
এতদিন বসে থাকতে হত কখন বেলা ৩টা বাজে। গ্যাস এলে রান্না হবে। তারপর দুপুরের খাওয়া। তারপর সেটা লেট করতে করতে যখন রাত ৯টা বাজল তখন আর লেট করার সময় নেই। বাজারে ছুটতে হল কেরোসিনের চুলা কিনতে। কেরোসিনও একধরনের তেল। ওটাও কিনতে হয় অনেক টাকা দিয়ে। কাজেই সেখানেও দাম বাড়ার কিছু ফল ভোগ করতেই হয়।
আর খাদ্যের দাম। দুবছর আগে সাধারন মানুষ লাইন দিয়েছিল বিডিআরের দোকানে। তারপর কতকিছুই তো ঘটে গেল। সেই টাকার ভাগাভাগি নিয়ে রক্তারক্তি। শেষে বিডিআর-ই বাতিল করতে হল। শেষফল হচ্ছে তখন চালের দাম ৫০ টাকা ছোয়নি, এখন ছুয়েছে।
এর অবশ্য অন্যদিকও আছে। সরকার বলছেন মানুষের সামর্থ্য বেড়েছে। ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। চারদলীয় জোট সরকারের মত একই ভাষায়। কাজেই জিনিষের দাম বাড়তেই পারে। এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মানুষের হাতে যখন বেশি টাকা থাকে তখন বেশি দামে কেনে। টাকা না থাকলে চাল কিনছে কিভাবে ?
কিছু মানুষ আবার অনেক বেশি বিষয় নিয়ে মাথা ঘামায়। বলে বিশ্বের মানুষ যেমন বাড়ছে হুহু করে তেমনি হুহু করে ফসলের জমি কমছে। আমেরিকা ইউরোপের মানুষ একসময় অতিমাত্রায় প্রোটিন খেয়ে স্থুলরোগি সেজে বাহাদুরী দেখাত। এখন এশিয়ার বহু মানুষ ওই দলে যোগ দিয়েছে। তারাও রোগাপটকা থেকে দরীদ্র দেশের দুর্নাম রটাতে চায় না। বার্গার খেয়ে বার্গারের মত চেহারা দেখাতে চায়। মানুষের খাদ্যচাহিদা বিশ্বের খাদ্যসরবরাহের সামর্থ্যকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এখনও বলা হচ্ছে যাচ্ছে, কারন তারা হিসেব করে বের করেছেন ২০৭০ সালে একে অন্যকে ছাড়িয়ে যাবে। তখন নাকি খাবার সুসম বন্টন করলেও সকলের খাবার মিলবে না। অনেককেই না খেয়ে থাকতে হবে। সেইসাথে বর্তমানের মত যদি রাশিয়ায় দাবানল, অষ্ট্রেলিয়ায় বন্যার মত ঘটনা ঘটে তাহলে তো কথাই নেই।
সরকারের পক্ষ থেকে একবার বলার চেষ্টা করা হয়েছিল অন্য দেশে জমি লিজ নিয়ে সেখানে চাষ করা হবে। তারপর সেই ফসল দেশে এনে সবার খাদ্য নিরাপত্তা দেয়া হবে। কাজটা কতদুর এগোল জানা যায়নি। নিশ্চয়ই অন্যান্য জরুরী কাজের নিচে চাপা পড়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে কেনিয়ার বহু জমি লিজ নিয়েছে কাতার কয়েক বছর আগে। ইউরোপের দেশ স্পেন, ফ্রান্সও একাজ শুরু করেছে অনেক আগে। তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে হয়ত।
হে-হে-হে, বাঙালীর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকবে কে ? বাঙালী খেপলে পারে না এমন কাজ নেই। ওসব ফালতু বিষয় এখন থাক। আগের কাজ আগে। যুদ্ধাপরাধীদের আগে জেলে ঢুকাতে হবে। দেশের নিরাপত্তা সকলের আগে। আগে দেশের স্বাধিনতা-সার্বভৌমত্য রক্ষা করুন। সেটা কেন-কিভাবে-কোন ঝুকিতে পরেছে সেপ্রশ্ন করবেন না। দেশের কথায় প্রশ্ন চলে না। যা বলছি তারসাথে সুর মেলান।
পেটের চিন্তার মত ফালতু বিষয় নিয়ে চিন্তা পড়ে করলেও চলবে।

0 comments:

 

Browse