মিডিয়া ভাগ্য

Jan 20, 2011
কারো কারো মিডিয়া ভাগ্য খুব ভাল। অন্যরা যখন নিজের নাম-ছবি মিডিয়ায় দেখার জন্য হাপিত্যেস করে, নিজের অর্থব্যয় করেও সুযোগ পায় না, তখন কারনে অকারনে এইসব ভাগ্যবাদের খবর ছাপা হয়। টিভিক্যামেরা হাতে মানুষ তাদের পেছনে ছোটে। দেশের মানুষ, বিশ্বের মানুষ তাদের মুখদর্শন করে।
প্রফেসর ইউনুসের কথাই ধরুন না কেন। তিনি নোবেল পুরস্কার পেলেন। সাথেসাথে সারাবিশ্বের মিডিয়া ছুটল তার পেছনে। এটা অবশ্যই অত্যন্ত বড় একটা কারন। যদিও অনেকেই সুযোগ বলে থাকেন এটা বিশ্বের সবথেকে বিতর্কিত পুরস্কার। যিনি বাংলাদেশে পারমানবিক বোমা ফেলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনিও পেয়েছিলেন। পাননি মহাত্মা গান্ধি। যাহোক, তারপরও এটা বিশাল কারন।
তিনি এক ফান্ডের টাকা আরেক ফান্ডে সরিয়ে আবারও খবরে এলেন। সেখানেও নানা মুনির নানামত। তার প্রতিস্ঠান থেকে ব্যাখা দেয়া হল তিনি সেকাজ করেছেন দরীদ্রদের মধ্যে দরীদ্রতমদের ২% সুদে ঋন দেবেন বলে। সেটা না করলে বড় অংকের ট্যাক্স দিতে হত, ২% সুদে ঋন দেয়া সম্ভব গত না। এটাও ছাপা হল ওই খবরের কাগজেই। আবার তিনি সাক্ষাতকার দিলেন আমেরিকার টিভিতে। সেখানে বললেন ক্ষুদ্রঋনের সুদ ২৫% এর বেশি হওয়া উচিত না, তার গ্রামিন ব্যাংক নেয় ২০%, সেখবরও ছাপা হল পত্রিকায়। ২% ঠিক নাকি ২০% ঠিক সেকথা যদিও আলোচনায় এল না।
তারপরও, এগুলি কারন। কারন ছিল বলেই এগুলি খবর হয়েছে। এতে কারো বিন্দুমাত্র আপত্তি থাকা উচিত না। যার যে সন্মান প্রাপ্য তাকে সে সন্মান দিতেই হবে। আপত্তি অন্য বিষয়ে। অকারনে যদি তিনি মিডিয়ার সন্মান পান তাহলে।
২০০৭ সালে তিনি রাজনীতিবিদদের অসন্মান করে বক্তব্য দিয়েছিলেন। তারনামে মানহানির মামলা করা হয়েছিল। ২০১১ সালে তিনি সেই মামলায় জামিন নিতে আদালতে হাজির হয়েছেন। এটা একটু বাড়াবাড়িই।
তিনি রাজনীতিবিদদের গালাগালি করেছেন কয়েক বছর আগে। সারাদেশের মানুষ প্রতিদিন-প্রতি মুহুর্তে সেকাজ করে। অত্যন্ত অকথ্য ভাষা গালাগালি করে। তারা কেউ মিডিয়ায় চেহারা দেখানোর সুযোগ পেল না, আর তিনি পেলেন! এটা অবিচার।
মানুষ আদালতে বিচার আশা করে। তারাই যদি কয়েক বছর আগের সামান্য বিষয় নিয়ে তাকে এত প্রাধান্য দেয়, আগামীতে আবারও খবর তৈরীর জন্য সময় জানিয়ে দেয় তখন প্রতিবাদ জানাতেই হয়। যদিও আদালতের প্রতিবাদ জানানোর বিষয় খুব সহজ না। টিআইবি তাদের প্রতিবেদনে দুর্নীতির উল্লেখ করায় সাথেসাথে সমন জারী করা হয়েছে। পরে আবার চায়ের দাওয়াও দেয়া হয়েছে।
সে যাকগে। কথা হচ্ছে, রাজনীতিবিদদের নামে কুকথা বলার জন্য যদি প্রফেসর ইউনুস এতটা সন্মান পেতে পারেন তাহলে সাধারন মানুষেরও কিছু অধিকার  আছে একই কাজে একই ফল পাওয়ার। তাদের মিডিয়া ভাগ্য সবসময় অবহেলা করা হবে, সবসময় মিডিয়া থেকে আড়ালে রাখা হবে সেটা হতে পারে না।
কাজেই, দলে দলে আওয়াজ তুলুন ...

0 comments:

 

Browse