হায়- মরি বাংলা ভাষা

Feb 21, 2010
কিসের কথা কইতাছেন। একুশে ফেব্রুয়ারী। পার্টি। আইচ্ছা-আইচ্ছা, আমুনে। আইজতো ছুটির দিন। সমস্যা নাই। কি ব্যবস্থা করছেন কন। দ্যাশের লগে বিট্রে করতে পারমু না কইলাম। বাংলা মদের ব্যবস্থা রাইখেন। আর কি পোষাক পড়তে হইব ? কালা পাঞ্জাবী-কালা শাড়ি
লোকে নাকি অল্প শোকে কাতর হয়, বেশি শোকে পাথর হয়। বাঙালী কাতর না পাথর বোঝা কঠিন। আমাদের বিশেষজ্ঞরা বলেন বাংলার প্রচলন হওয়া উচিত সবখানে, তবে ইংরেজি ছাড়া চলবে না। সবখানে বাংলা, পেশার জন্য ইংরেজি। ডলার-পাউন্ড-ইউরো তো আসে ওই ইরেজীর দেশ থেকেই। কথা না বললে ওরা জানবে কিভাবে আমরা কত অসহায়। কত প্রয়োজন। প্রয়োজনে সব করতে হয়। ঢাকাবাসি হয়ত গ্রীন সুপার মার্কেটের সামনে একজন পঙ্গু ভিক্ষুক দেখে থাকবেন। একদিন তার মুখে শোনা গেল, মাদার, মাদার, গিভ মি ফাইভ টাকা।
লক্ষ্য এক বিদেশী ভদ্রমহিলা। এমন নিখুত ইংরেজি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরুনো কীর্তিমানরাও বলতে পারেন কিনা সন্দেহ। একেই বলে প্রয়োজন। এজন্যই বিদেশী ভাষা।
আরেক উদাহরন না দিলে চলে না। পরিচিত একজন হঠাত করে জাপানী ভাষা শিখতে শুরু করল। কারন জানা গেছে জাপানী ভাষা শিখলে, জাপানের কোন প্রফেসরের রিকমেন্ডেশন বাগাতে পারলে জাপান যাওয়া যায়। চলল দু প্রক্রিয়াই। এক ভদ্রলোকের সাথে চিঠি আদান প্রদান। একবার সাহস করে লিখেই ফেলল জাপানী ভাষা শেখার কথা। পরের চিঠি এল খাস জাপানী ভাষায়। তারপর সেই চিঠি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি। কে পাঠোদ্ধার করে দিতে পারে।
জ্ঞানলাভে জন্য প্রয়োজনে চীন দেশে যাও, কোরানের কথা। বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজনে হিব্রু ভাষা শেখ, বর্তমান বাংলাদেশের কথা। এখনও হিব্রুর প্রচলন হয়নি সেখানে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে। তবে ভালমতই চালু রয়েছে কোরিয়ান-ইতালিয়ান-মালয়েশিয়ান ভাষা পর্ব। মুখে ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে।
ভাষার মাস। ভাষার দিন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এতো আমাদেরই অবদান। সবাই- অবাক তাকিয়ে রয়। ক্রিকেটে সেঞ্চুরী না হতে পারে বইমেলায় প্রতিদিন নতুন বইয়ের সেঞ্চুরী পুর্ন হয়। বেষ্টসেলারের নতুন সংস্করন প্রতিদিন। লেখক নিজেই ষ্টলে উপস্থিত থাকবেন। আপনারা দলেদলে যোগ দিন। মাতৃভাষা প্রয়োগ করুন।
একবার এক বিদেশীর সাথে থাকা অবস্থায় রাস্তায় দুজনের মাতৃভাষার সংলাপ শুনে কান গরম হয়ে উঠল। একজনের সাথে আরেকজনের কি সম্পর্ক, কার জন্মদাত্রী কে এসব যদি জিজ্ঞেস করে বসে ? আড়চোখে তাকালাম তার মুখের দিকে কথার অর্থ বোঝে কিনা জানার চেষ্টায়। তিনি আস্বস্ত করে বললেন, সকলের আগে ওই শব্দগুলোর অর্থ শিখে নিয়েছি। একজন বলেছে ওগুলোই বেশি ব্যবহার হয়। ওথেকেই বুঝে নিতে হয় আন্তরিকতার পরিমান।
কাজেই, ভাষার গর্ব করুন। বাংলাভাষা দেশেই থেমে নেই। ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বাইরে। হয়ত হলিউডের **** *** শব্দের সাথে বাংলা শব্দও শোনা যাবে একদিন। আমরা এই ভাষাকে ছড়িয়ে দেব সবখানে।
আর ইংরেজি। ওটা ছাড়া জাপানীরা বিশ্বে দ্বিতীয়  ধনী দেশ হতে পারে। ওরা নিজের দেশে থাকে, দেশে কাজ করে। আমাদের শিখতেই হবে। যত ভাল ভাল চাকরী সব যে বিদেশে।

0 comments:

 

Browse