কার কি চাই

Dec 25, 2011
সবারই কিছু চাহিদা থাকে। একজন শিশু খেলনা পেলে খাবার কথাও ভুলে যায়। তারপর যখন বয়স বাড়তে থাকে তখন আগ্রহের বস্তুও পাল্টায়।  অমুকের জন্য জীবন দিতে পারি ...
থামুন থামুন, এসব অর্থহীন কথা নিয়ে মাথা ঘামিয়ে সময় নষ্ট করে কে। তারচেয়ে বরং চাহিদার ভিন্ন চেহারা দেখা যাক।
ডেল কার্নেগি কোটি টাকা কামিয়েছিলেন শুধুমাত্র কথা বিক্রি করে। তিনি একবার বলেছিলেন আপনার আসলে চাহিদা কি তার একটা তালিকা করে দেখুন তো। ১ নম্বর, টাকা এবং টাকা দিয়ে পাওয়া যায় এমন সব জিনিষপত্র। এরপর ..
খেই হারিয়ে গেল। টাকা এবং টাকায় কেনা যায় এমন সবকিছুই যদি থাকে তাহলে ২ নম্বর বলে কিছু প্রয়োজন থাকে কি ? হয়ত বলতে পারেন হাজার বছর বাচতে চাই। যদিও সকলেই জানেন জন্ম যখন হয়েছে মৃত্যু হবেই, এবং হাজার বছর বাচার কোন উদাহরন নেই। এমনকি যারা ইনটেনসিভ কেয়ারে থেকে এসেছেন, নাকেকানে খত দিয়ে বলেছেন আর রাজনীতি করবেন না তারাও ফিরে এসেই আগের কর্ম শুরু করেছেন। আর মরার ভয় নেই। এখন সময় কামানোর।
কিংবা প্রশ্ন করতে পারেন কত কামালে কামানো শেষ হয়। দাড়ি কামানোর সময় দাড়ি শেষ হলে থামতে হয়। টাকা দাড়ি না। এর কোন শেষ নেই। যত খুশি কামান, থামার প্রয়োজন নেই। শতকোটি, হাজার কোটি, সম্ভব হলে লক্ষ কোটি।
অনেকে বলেন (সবাই স্বিকার করেন না) বাংলাদেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে থাকে। শতকরা ৮০ জনের বেশি মানুষ খাবার হিসেব করে খায়। এই হিসেব পুষ্টির হিসেব না, দামের হিসেব। কোন খাবারের দাম কম সেই হিসেব। বাকিদের হয়ত ১০ থেকে ১৫ ভাগ সাধ্য পুরন করে খাওয়ার সুযোগ পায়। এরপর যারা তাদের হিসেব অন্যরকম। ক্রমাগত খেতে খেতে ব্যাঙের মত ফুলতে থাকেন। গায়ে চর্বি জমে, ভেতরে রক্তচলাচল বাধাগ্রস্থ হয়, ব্যাংকক-সিংগাপুর এমনকি লন্ডন-নিউইয়র্ক পর্যন্ত যেতে হয়।
টাকা খাওয়া ঘি-মাখন খাওয়ার তুলনায় নিরাপদ। প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করেই বলেছেন প্রতিদিন ব্যাংক থেকে যে দেড়শ কোটি টাকা ধার নেয়া হচ্ছে সেটা দিয়ে ঘি-মাখন খাচ্ছেন না। বড়জোর শতসখা নিয়ে নিউইয়র্ক বেড়াতে যাচ্ছেন। এক সফরে ১০০ জনকে নিউইয়র্ক দেখানো কি যা-তা কথা। এরা ভুলেও আওয়ামী বিরোধী হবে না। সত্যি বলতে কি আওয়ামী চালের ভাত যারা খান তারা কখনো যুদ্ধাপরাধীদের দলে যোগ দেন না। এই ভাতের গুনেই তারা দেশপ্রেমিক।
কাজেই, টাকা কামানোর শেষ বলে কিছু নেই। আবুল নামের এক মন্ত্রী আগের আমলে অবৈধ পাশপোর্ট ব্যবহার করে মন্ত্রীত্ব হারিয়েছিলেন। এবারে তিনি পেয়েছিলেন আরো বড় মন্ত্রীত্ব। রীতিমত পদ্মা সেতুই খেয়ে ফেলেছেন। বিশ্বব্যাংক সেটা জেনে ফেলায় তাকে সরানো হয়েছে সেখান থেকে। আর নতুন যায়গা হচ্ছে একেবারে ভাড়ার ঘর।
হ্যা, ঠিকই শুনেছেন। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি টাকার যে যায়গা মোবাইল ফোন সেই যায়গায় তাকে পাঠানো হয়েছে। অনেকেই বলেন টাকা সংগ্রহে তারচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি আর নেই। তিনি হাওয়া থেকেও টাকা বানাতে পারেন। কাজেই সময় নষ্ট না করে তাকে কাজে লাগানো হবে এটাই তো স্বাভাবিক।
চাহিদার প্রশ্নটা আসে সেকারনেই। মন্ত্রী আবুল কি চান প্রশ্ন করছেন অনেকেই। যে পরিমান টাকা এরই মধ্যে জমিয়েছেন তাতে আগামী বংশধরদের খাবার জন্য বিছানা থেকে ওঠা প্রয়োজন হবে না। তাহলে!
আসলে প্রশ্নটা করা প্রয়োজন ছিল অন্য যায়গায়। তাকে নিয়োগ দেয়ার পুরো কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীর। তিনি কি চান তার কাছে। সারা দেশের, সারা বিশ্বের মানুষের সমালোচনা সহ্য করে তিনি একাজ করছেন কোন চাহিদা ছাড়াই একথা বিশ্বাস করার কোনই কারন নেই।
চাহিদার হিসেব সত্যিই জটিল। ডেল কার্নেগির কথামত একবার লিস্ট তৈরী করে দেখুন না আসলে কার কি চাই।

0 comments:

 

Browse