নিজে বাচলে বাপের নাম

Jan 22, 2010
বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাতায় নাম না থাকতে পারে, বিশ্বব্যাপি খবরের হেডলাইন হতে বাধা নেই। এমন ছবির বিষয় হওয়ার সৌভাগ্য বিশ্বের আর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়না। চারিদিকে ডজন ডজন পুলিশ, তারই মাঝখানে একজন আরেকজনের মাথায় আঘাত করছে অস্ত্র দিয়ে।
এটাই একমাত্র ছবি না। ওয়েষ্টার্ন ছবির ষ্টাইলে গুলি ছুড়ছে একজন। আরেক ছবিতে দলবেধে হাতে অস্ত্র নিয়ে ছুটে চলেছে বীর সেনানীরা। দেশের আগামী দিনের নেতৃত্ব।
ছবির সাথে খবরও রয়েছে। পুলিশ কাউকে ধরেনি (ধরতে পারেনি বললেও চলে), তবে পরে মামলা করা হয়েছে। যদি ছবিতে পুলিশদলের মুখভঙ্গি লক্ষ্য করে থাকেন তাহলে আপনি নিশ্চয়ই নিশ্চিত, ধরার কিংবা খুনাখুনিতে বাধা দেয়ার কোন ইচ্ছে তাদের ছিল না। বরং চোখের সামনে হলিউডি-বলিউডি দৃশ্য দেখা যাচ্ছে যখন তখন বিনে পয়সায় দেখে নেয়া যাক, এটাই প্রকাশ পেয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবারও হুংকার দিয়ে বলবেন কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে, এটা তো জানাই।
ছবির ব্যক্তিদের পরিচয় নিয়েও কথা ছাপা হয়েছে। কেউ সাদামাটা ভাবে বলে গেছেন ছাত্রহলের দুই গ্রুপের সন্ত্রাস। কেউ আবার ছবির ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা, পরিচয় উল্লেখ করে চিনিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা/কর্মী হিসেবে।
আসলে ছাত্রদল কিংবা ছাত্রলীগ, তারা যে শক্তি ধারন করেন তা কখনো কখনো দেখানো প্রয়োজন হবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রতিদিন যখন ছাত্রলীগ খবরে প্রাধান্য পাচ্ছে তখন ছাত্রদলই বা পিছিয়ে থাকবে কেন ? তারা কম কিসে ?
আমার আপত্তি অন্যখানে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমনই একটা যায়গায় যার পাশের রাস্তা দিয়ে সাধারন মানুষকে চলাফেরা করতে হয়। প্রতিদিন-প্রতিমুহুর্তে লক্ষ লক্ষ মানুষ চলছে ওদিক দিয়েই। তারা নিশ্চয়ই অস্ত্র নিয়ে বেড়ায় না। পুলিশের মত হেলমেট-পোসাক পড়ে না। ধারেকাছে থাকলে পুলিশ তাদের ধরতেও কার্পন্য করবে না। তারা কোন দলের একথা বলার জন্য কেউ সামনে গলা বাড়াবে না। তাদের পক্ষে কোন জাতিয় নেতা এগিয়ে আসবে না। যার অর্থ তারা একেবারে অরক্ষিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের জন্য ওয়ারজোন। কখন কোনদিক থেকে আঘাত আসবে জানার উপায় নেই। (অন্য বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখ না করলেও চলে কারন সেখানে অন্তত এত মানুষ এভাবে চলাফেরা করে না।)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এই দলে ফেলা যায় না। মানুষকে যেতেই হয়। নিজের জীবন বাচাতে হয়। নিজে বাচলে বাপের নাম। অন্তত বাপের নাম রাখার জন্যও নিজের জীবন বাচাতে হয়।
কাজেই, আমার সহজ-সরল বক্তব্য, যুদ্ধক্ষেত্রকে পৃথক রাখার উদ্দ্যোগ নিন। চারিদিকের সাধারন মানুষের চলাচলের পথ থেকে নিরাপদ দুরত্ব অথবা নিরাপদ বেষ্ঠনী দিয়ে এমনভাবে রাখুন যেন বাইরের পথচারী যুদ্ধ এড়িয়ে চলতে পারে।
ভেতরে তারা স্বাধীনভাবে শক্তি পরীক্ষা করুন, আগামী দিনের দেশ পরিচালনার প্রস্তুতি নিন। এই প্রস্তুতিকালে কে আহত হল, কে নিহত হল তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।

1 comments:

James Rubel said...

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আসলেই অস্ত্র আর গোলাবারুদের নিচে 'ঢাকা' পড়েছে।

 

Browse