তাতে আমার কি

Dec 4, 2009

২০৫০ সালে, যদি এই বিশ্ব টিকে থাকে, পৃথিবীর জনসংখ্যা হবে ৯০০ কোটি। বাংলাদেশের জনসংখ্যার সঠিক তথ্য নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেন কাজেই সর্বজনস্বিকৃত বিশ্বের বিষয়টি আলোচনায় রাখাই ভাল। এর পেছনে যারা রয়েছেন তাদের তথ্যকে চ্যালেঞ্জ করা কঠিন।

তাহলে, বিশ্বের জনসংখ্যা হচ্ছে ৯০০ কোটি। বাসস্থান, শিল্পকারখানা ইত্যাদি ইত্যাদির জন্য আবাদী যায়গা কমতেই থাকবে প্রতিবছর। এমনকি প্রতিদিন। যার অর্থ মাঠের ফসল কমে আসবে। বর্তমান ব্যবস্থায় খাদ্যসংকটে রয়েছে একশকোটির বেশি মানুষ। সেটা বেড়ে কয়েকশ কোটি হবে। বর্তমানে সারা বিশ্বে যা খাবার তৈরী হয় তখন নাকি দ্বিগুন খাবার তৈরী করতে হবে। এখনই প্রতি সেকেন্ডে নাকি ৬ জন মারা যায় খাবার স্বল্পতায়।

খবরের কাগজের একটা টাটকা খবর এখানে উল্লেখ করা যায়। বাংলাদেশে শতকরা ৪০ জন বাস করে দারিদ্রসীমার নিচে। দারিদ্রসীমার নিচে বাস করার অর্থ তারা প্রয়োজনীয় খাবার পায় না। শতকরা ৪০ জন অর্থ ১৫ কোটি জনসংখ্যার হিসেবে ৬ কোটি। জনসংখ্যা বেড়ে আরো ৫ কোটি যোগ হলে সেটা হবে ১১ কোটি।

তাতে আমার কি ?

আসলেই তো। তাতে আমার কি ? টাকা থাকলে চাল পাওয়া যাবে, মাংশ পাওয়া যাবে। সেগুলি কোথায় তৈরী হবে সে চিন্তা যাদের তারা করবে। তারা তো ব্যবসা বন্ধ করছে না। আমার চেয়ে তার গরজ বেশি। ব্যবসা না থাকলে তারা খাবে কি ?

যার সামর্থ্য আছে সে দোকান থেকে কিনবে। যার নেই তার চিন্তা তার। আমাদের নেতারা-বিশেষজ্ঞরা তো সবসময়ই বলেন খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্নতা অর্জন করা হবে। যে সামান্য ঘাটতি এখনো আছে সেটা পুরন করা হবে। ধনী দেশগুলি আমাদের ভাল চায় না, সবসময় আমাদের পিছনে লেগে থাকে, সেকারনে এতদিন সম্ভব হয়নি। ইনশাল্লাহ হয়ে যাবে।

আমাদের ইনশাল্লাহ আছে, অনেকেরই নেই। অন্তত ইউরোপের লোকজনের নেই। সেজন্যই তাদের ভিন্নপথ খুজতে হয়। তারা নাকি আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে জমি লিজ নিচ্ছে আগে থেকেই। সেখানে ফসল ফলাচ্ছে, মাছ ধরছে। তারপর নিজের দেশে নিয়ে যাচ্ছে। শুধু ইউরোপই বা কেন, কাতার নাকি কেনিয়ার বড় একটা অংশ লিজ নিচ্ছে। সেখানে চাষ করে নিয়ে যাবে নিজের দেশে। লোকজন পথে নেমেছে সেটা ঠেকাতে।

এই পথে নামাটাই একটা ভয়ের ব্যাপার। গতবছর চালের দাম বাড়ায় লোকজন পথে নেমেছিল। সরকার-পুলিশ-আইন কিছু মানেনি। রাস্তা জুড়ে ভাংচুর-আগুন। কোন কোন দেশে নাকি সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছে।

বিশেষজ্ঞ নামের উটকো লোকগুলি আবার সবসময় আগাম খারাপ খবর দেয়। তেলের দাম নাকি বাড়তেই থাকবে। এবার দুশো ডলার ছাড়িয়ে যাবে। চাষের খরচ বেড়ে যাবে। সেইসাথে আবাদ কম হওয়ায় খাবারের দামও নাকি বাড়বে। আবারও নাকি লোকজন পথে নামবে। এখন পর্যন্ত নাকি ঠেকা দিয়ে চালানো সম্ভব হয়েছে। যেখানে আছে সেখান থেকে যেখানে নেই সেখানে সাপ্লাই দেয়া হয়েছে। সবদেশেই যখন নেই অবস্থা হবে তখন নাকি এই সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যাবে। শুরু হবে খাদেত্যর জন্য হাহাকার, গন্ডগোল, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকার পতন। ঠেকা দিয়েও সামলানো যাবে না।

তাতে আমার কি ?

নিজে বাচলে বাপের নাম। কিভাবে বাপের নাম টিকিয়ে রাখা যায় সেটা নিয়ে ভাবাই ভাল। নিজের জীবন বাচানো ফরজ। সময় থাকতে কিছু কামিয়ে নেই, এসব তত্ত্বকথা শুনে কাজ নেই।

0 comments:

 

Browse